রবিবার ৮ জুন ২০২৫ - ১০:৪৮
কোমের হাউজার বরকতেই ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান; সর্বোচ্চ নেতার কৌশলগত বার্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের অবিভাবক পরিষদের (শুরায়ে নিগাহবান) ফকীহ সদস্য আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ মোহাম্মদ রেজা মুদার্রেসি ইয়াযদি বলেছেন, কোমের হাউজায়ে ইলমিয়া (ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র) ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের অন্যতম ভিত্তি ও আশীর্বাদ। তিনি বলেন, এই বিপ্লবের রাহবার ইমাম খোমেনি (রহ.) ছিলেন আয়াতুল্লাহ হায়েরি ইয়াযদির (রহ.) একজন বিশিষ্ট ছাত্র এবং কোম হাউজারই অন্যতম ফসল।

হাউজায়ে ইলমিয়া কোমের প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উপলক্ষে হাওজা নিউজ এজেন্সি-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসলামের জ্ঞান ও শিয়া চিন্তাধারার সংরক্ষণ ও প্রচারে আলেমগণ বরাবরই মূল ভূমিকা পালন করে আসছেন। প্রকৃত অর্থে, ইসলামের ও তাওহিদি সভ্যতার দূত হচ্ছেন এ সকল আলেমগণ।

তিনি বলেন, গায়েবাতের যুগসহ ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে আলেমরা আহলে বাইতের (আ.) জ্ঞান জনগণের মাঝে পৌঁছে দিয়েছেন এবং দ্বীনি জ্ঞান ও অনুশীলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

আলেমদের ভূমিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নাজাফ, কুফা এবং অন্যান্য শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চলে তাঁরা ইসলামি জ্ঞানের পরিপূর্ণতা ও সংরক্ষণে অসাধারণ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এমনকি যেখানে শিয়ারা সংখ্যালঘু ছিলেন, সেসব এলাকাতেও তাঁরা দ্বীনের খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন— যদিও তাঁদের অবদান আজও অনেকাংশে অবজ্ঞাত রয়ে গেছে।

আধুনিক যুগের আলেমদের অবদানের কথা স্মরণ করে আয়াতুল্লাহ মুদার্রেসি ইয়াযদি বলেন, আয়াতুল্লাহ হায়েরি ইয়াযদি (রহ.) এক সংকটময় সময় ইরাক থেকে ইরানে ফিরে এসে কোম হাউজাকে পুনরুজ্জীবিত করেন। তাঁর সীমাহীন পরিশ্রম ও ছাত্রদের সহযোগিতায় এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পরবর্তীকালে আয়াতুল্লাহ বোরুজার্দি (রহ.)-এর আমলে পূর্ণ বিকাশ লাভ করে।

তিনি বলেন, কোম হাউজার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফলাফল হলো ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান। এই রাষ্ট্রব্যবস্থার রাহবার, অভিভাবক ও রক্ষাকর্তারা সবাই হাউজার শিক্ষার্থী ও আলেম শ্রেণির অংশ। তাই এই প্রতিষ্ঠানের অবদান অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি জানান, গত এক শতকে কোম হাউজা থেকে ফিকহ, উসুল, দর্শন, কালাম, তাফসিরসহ বিভিন্ন ইসলামী শাস্ত্রে অসংখ্য উচ্চমানের আলেম ও গবেষক গড়ে উঠেছেন।

হাউজায়ে ইলমিয়ার পরিচিতি ও গুরুত্ব তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের মূল্য, এর প্রতিষ্ঠাতার অবদান ও কার্যক্রম আমাদের চেনা ও বিশ্বব্যাপী তুলে ধরা জরুরি। এটি শুধু একটি দায়িত্ব নয়, বরং আমাদের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব।

সাক্ষাৎকারের শেষাংশে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তিনি হাউজার ভবিষ্যৎ পথনির্দেশনায় একটি কৌশলগত বার্তা প্রদান করেছেন। সবার উচিত এই বার্তাটি গভীরভাবে অনুধাবন করা এবং যথাযথভাবে তা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha